ফলটির অন্দরে উপস্থিত ফাইবার, ভিটামিন সি, এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফসফরাস, আয়রন, পটাশিয়াম এবং কপার নানাভাবে শরীরের যেমন উপকারে লেগে থাকে, তেমনি ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ডার্মাটোলজিস্টদের মতে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বাস্তবিকই পেঁপের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কিন্তু কীভাবে এই ফলটি ত্বকের উপকালে লেগে থাকে? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে পেঁপের অন্দরে থাকা উপকারি উপাদানেরা ত্বকের গভীরে প্রবেশ করার পর কোলাজেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে একদিকে যেমন ত্বক ফর্সা হয়ে ওঠে, তেমনি স্কিন টোনের উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। তবে এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত পেঁপে দিয়ে বানানো ফেসপ্যাকের সাহায্যে ত্বকের পরিচর্যা করলে মেলে আরও অনের উপকার। যেমন ধরুন...
১. ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে ত্বকের অন্দরে আদ্রতা কমতে থাকলে সৌন্দর্য কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ত্বকের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতেও সময় লাগে না। তাই তো ত্বকের আদ্রতা যাতে কোনওভাবেই না কমে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে এই ফলটি। এখন প্রশ্ন হল কীভাবে? এক্ষেত্রে ১ চামচ পেঁপে নিয়ে তার সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে একটা মিশ্রন বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটা মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে মিশ্রনটি। এইভাবে যদি নিয়মিত ত্বকের খেয়াল রাখতে পারেন, তাহলে অপূর্ব সুন্দরি হয়ে উঠতে দেখবেন সময়ই লাগবে না।২. বলিরেখা কমা: একাধিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে স্ট্রেস এবং পরিবেশ দূষণের কারণে বহু মানুষের ত্বকই অসময়ে বুড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে সৌন্দর্য কমছে চোখে পরার মতো! তাই তো ৩০-এর পরেও যদি অপূর্ব সুন্দরি থাকতে চান, তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় পেঁপেকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো পেঁপে নিয়ে ভাল করে মুখে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা।
৩. ডার্ক সার্কেল কমায়: ৪০-এর আগে কয়েক লাখি গাড়ি এবং বাড়ির মালিক হওয়ার স্বপ্ন মনে নিয়ে পাগলের মতো কাজ করে চলেছে, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কিন্তু এমনটা করতে গিয়ে শরীর যেমন যাচ্ছে ভেঙে, তেমনি ত্বকও যাচ্ছে বুড়িয়ে। আর সেই সঙ্গে ডার্ক সার্কেল তো আছেই। আপনার ত্বকের অবস্থাও যদি একই রকম হয়ে থাকে, তাহলে হাফ কাপ পেঁপে নিয়ে চোখের তলায় লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে চোখের তলায় লাগানো পেস্টটা সারা মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করে নিন। কিছু সময় পরে হলকা গরম জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এমনটা নিয়মিত করতে পারলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! সেক্ষেত্রে চোখের কালি তো মিটবেই, সেই সঙ্গে ত্বকের সার্বিক সৌন্দর্যতাও বৃদ্ধি পাবে।
৪. একজিমার মতো রোগের প্রকোপ কমায়: আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের উপর লেখা বেশ কিছু বই অনুসারে ত্বকের প্রদাহ কমাতে পেঁপের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো একজিমার মতো রোগের প্রকোপ কমাতে এই ফলটিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। আসলে পেঁপের অন্দরে থাকা বেশ কিছু উপকারি এনজাইম এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল যারা একজিমায় ভুগছেন, তারা কীভাবে পেঁপেকে কাজে লাগাবেন? এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো পেঁপে নিয়ে শরীরের যেখানে যেখানে একজিমায় প্রকোপ বেড়েছে, সেখানে লাগাতে হবে। এমনটা করলে রোগের প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলকানির মতো লক্ষণ কমতেও সময় লাগবে না।
৫. ট্যানের প্রকোপ কমায়: গরমের সময় মাত্রাত্রিরিক্ত তাপের কারণে ত্বকের পুড়ে যাওয়াটা বেজায় স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু প্রশ্নটা হল এমন পরিস্থিতিতে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখা যায় কীভাবে? এক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে পেঁপেকে। তাহলেই দেখবেন উপকার মিলবে একেবারে হাতে-নাতে! চার কাপ পেঁপে নিয়ে তার সঙ্গে ১ চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে হবে পেস্টটা।
৬. ব্রণর প্রকোপ কমায়: নিয়মিত পেঁপের সাহায্যে ত্বকের পরিচর্যা করলে স্কিনের অন্দরে বিশেষ কিছু উপকারি এনজাইমের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাবে ব্রণর প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও এই ফলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই রোগমুক্ত সুন্দর ত্বকের অধিকারি যদি হতে চান, তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় পেঁপেকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!
No comments:
Write Comments